ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম এবং স্ট্র্যাটেজিক গেম

Computer Science - ডিসক্রিট ম্যাথমেটিক্স (Discrete Mathematics) - অ্যালগরিদমিক গেম থিওরি (Algorithmic Game Theory)
260

ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম (Nash Equilibrium)

ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম হলো গেম থিওরির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, যেখানে খেলোয়াড়রা তাদের নিজ নিজ কৌশল বা স্ট্র্যাটেজি বেছে নেওয়ার পর কোনো খেলোয়াড়ই একতরফাভাবে তার কৌশল পরিবর্তন করে লাভবান হতে পারে না। অর্থাৎ, ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম সেই পরিস্থিতি যেখানে প্রতিটি খেলোয়াড়ের কৌশল এমনভাবে নির্ধারিত হয় যে, অন্য খেলোয়াড়ের কৌশল অপরিবর্তিত থাকলে তাদের কোনো খেলোয়াড়েরই একতরফাভাবে তার কৌশল পরিবর্তন করে লাভ পাওয়ার সুযোগ থাকে না।

ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম গাণিতিকভাবে বলতে গেলে, যদি দুটি বা ততোধিক খেলোয়াড় থাকে, এবং \( S_i \) হচ্ছে \( i \)-তম খেলোয়াড়ের কৌশলের সেট এবং \( u_i \) হচ্ছে তাদের ইউটিলিটি (অথবা লাভ), তবে কৌশলের এক সেট \( (S_1^*, S_2^*, ..., S_n^*) \) ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়ামে থাকবে যদি প্রতিটি খেলোয়াড়ের জন্য নিচের সমীকরণটি সত্য হয়:

\[
u_i(S_i^*, S_{-i}^*) \ge u_i(S_i, S_{-i}^*)
\]

এখানে \( S_{-i}^* \) বাকি সকল খেলোয়াড়ের কৌশল নির্দেশ করে।

উদাহরণ:

ধরা যাক, দুই জন খেলোয়াড় আছে যারা কোঅপারেট (সহযোগিতা) বা ডিফেক্ট (বিশ্বাসঘাতকতা) করতে পারে। যদি উভয়েই কোঅপারেট করে, তাহলে তারা ভালো ফলাফল পায়। যদি একজন ডিফেক্ট করে এবং অপরজন কোঅপারেট করে, তাহলে ডিফেক্টকারী লাভবান হয় এবং কোঅপারেটকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই খেলাটি প্রিজনারস ডিলেমা নামে পরিচিত, এবং এর ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম হলো উভয়েই ডিফেক্ট করা, কারণ একতরফাভাবে কৌশল পরিবর্তন করলে কোনো খেলোয়াড়ই লাভবান হতে পারে না।

স্ট্র্যাটেজিক গেম


স্ট্র্যাটেজিক গেম বা কৌশলগত খেলা হলো একটি গেম থিওরির কাঠামো, যেখানে খেলোয়াড়রা একে অপরের সাথে কৌশল নির্ধারণ করে খেলে। প্রতিটি খেলোয়াড় তাদের সম্ভাব্য পদক্ষেপ বা কৌশলগুলো এবং প্রতিটি কৌশলের সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে সচেতন থাকে। স্ট্র্যাটেজিক গেমে খেলোয়াড়রা একে অপরের কৌশল অনুযায়ী নিজেদের লাভ বা ক্ষতির মান নির্ধারণ করে।

স্ট্র্যাটেজিক গেমের উপাদান:

  1. খেলোয়াড়ের সংখ্যা: গেমে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়ের সংখ্যা।
  2. কৌশল সেট: প্রতিটি খেলোয়াড়ের সম্ভাব্য কৌশল বা পদক্ষেপের সংখ্যা।
  3. পেআফ ফাংশন: প্রতিটি কৌশল সংমিশ্রণের জন্য লাভ বা ক্ষতির মান নির্দেশ করে।

স্ট্র্যাটেজিক গেমের প্রকারভেদ:

  1. সিমালটেনিয়াস গেম: এখানে খেলোয়াড়রা একে অপরের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানেন না এবং একসাথে সিদ্ধান্ত নেন।
  2. সিকুয়েনশিয়াল গেম: এই গেমে একজন খেলোয়াড়ের পদক্ষেপ দেখার পর অপর খেলোয়াড় সিদ্ধান্ত নেন।

উদাহরণ:

ধরা যাক, একটি বাজারে দুটি কোম্পানি রয়েছে যারা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। তারা দুজনেই একটি উচ্চ বা নিম্ন দামে পণ্য বিক্রি করতে পারে।

  • যদি উভয়েই নিম্ন দামে বিক্রি করে, তাহলে তারা উভয়েই কম লাভ পায়।
  • যদি একজন উচ্চ দামে এবং অপরজন নিম্ন দামে বিক্রি করে, তাহলে নিম্ন দামের বিক্রেতা বেশি লাভ পায়।
  • উভয়েই উচ্চ দামে বিক্রি করলে তারা সমান লাভ পায়।

এই ধরনের গেমে কৌশল নির্ধারণে ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম খুঁজে বের করা যেতে পারে, যেখানে কেউ একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বাড়তি লাভবান হতে পারে না।


সারসংক্ষেপ

ন্যাশ ইকুইলিব্রিয়াম হলো এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে কোনো খেলোয়াড় একতরফাভাবে কৌশল পরিবর্তন করে লাভবান হতে পারে না। স্ট্র্যাটেজিক গেমে প্রতিটি খেলোয়াড় কৌশল নির্ধারণের মাধ্যমে তাদের সর্বোচ্চ লাভ অর্জন করার চেষ্টা করে।

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...